Saumen Mondal

Saumen Mondal

পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চির একটা ছোটখাটো জন্তু। মুখের জাইগোম্যাটিক অঞ্চলজুড়ে ব্রণের দাগ আর মাথায় এলোমেলো লম্বা চুল– অদ্ভুত দেখায় তাও কাটতে ইচ্ছে করে না। আমাকে মনে রাখার সহজ উপায়।
একটা শার্ট, জিন্স আর একজোড়া কেডস পরে ঘুরি সারাদিন। একা-একা। শহুরে রাস্তায় ঠা-ঠা রোদে। খুব ইচ্ছে, গ্রীষ্ম-জীবনের ক্লান্তি কাটিয়ে একদিন ঝমঝম বৃষ্টিতে ভিজব সারা শহর কারো নির্লিপ্ত হাত ধরে।

বাঁহাতের হাত-ঘড়িটা টিকটিক শব্দ করে আমাকে কেন জানি না ভয় দেখায়। বলে, "সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে—তাড়াতাড়ি যা পারিস কিছু লেখ!"

নিম্ফেট ও একটি বিড়াল

অনর্গল বৃষ্টি পড়ছে। শিশিরের মতো ঘন বৃষ্টি ছোটো ছোটো ফোঁটায় ঝরছে। মাঝখানে পাকা উঠোনের দুপাশে দোতলা বিল্ডিং। একপাশের দালানের নিচতলায় একটা ঘরের দরজার সামনে আশ্রয় নিয়েছে একটি বিড়াল। বারান্দা নেই, কাজেই উঠোন থেকে বৃষ্টির জল ছিটে ছিটে বিড়ালটার গায়ে লাগছে।...

অপ্রকাশিত দিনলিপি

পূর্ণিমা তিথি সেদিন। বৈশাখের পূর্ণ চাঁদের আলোয় আমাদের পৃথিবী আলোকিত। আকাশ সে-রাতে তারায় তারায় ভরা। শীতলাবাড়ি মন্দিরে পুজো দেখতে গিয়েছি। পুজোশেষে বান্ধবীরা চলে গেছে। আমি চতুর্থ সিঁড়ির এককোণে বসে আছি। এখানে ওখানে আরো কয়েকজন আছে। আজকে ছেলেটার সাথে দেখা...

মেঘমেদুর

শীত চলে যাচ্ছে যাচ্ছে ভাব। অনেকদিন এক জায়গায় তল্পিতল্পা নিয়ে থেকে চলে যাওয়ার সময় যেমন মানুষ কষ্ট পায়, বারান্দা থেকে নেমে উঠোনে দাঁড়ালেই পা দুটোতে টান পড়ে মায়ার বন্ধনে, তেমনই প্রকৃতিকেও পিছন থেকে কে যেন ডেকে বলে, “থেকে যাও-না আর ক’টা দিন...

আ হ্যাপি এন্ডিং

ফাঁকা পিচ-ঢালা রাস্তা। দুজন হাত ধরে হাঁটছি। আমাদের থেকে কয়েক গজ দূরে সামনে-পিছনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আরো কয়েকটি ছেলে-মেয়ে। ঝুমঝুম করে বৃষ্টি নামল সহসা। কোনো পূর্ব-সংকেত ছাড়াই। আকাশে একটুও মেঘ জমেনি, চারিদিকের কোথাও একটুকরো অন্ধকার জুড়ে বসেনি, হিম হিম...

অপেক্ষা

মেইন সড়কটি পার হয়ে রেললাইন, রেলপথের দু-পাশ ঘিরে গায়গায় বইঘর। লাইব্রেরি-ঘুঁজি অতিক্রম করেই দেখলাম তোরণদ্বারের উপরে বড়ো অক্ষরে লেখা— “সরকারি বিএল কলেজ।” তখনও ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়নি। গেইটের কাছে আসতেই একজন মেহেদিরাঙা-দাড়িওয়ালা...

শেষ চিঠি

দুই বছর আগে ফেইসবুকে এক মেয়েকে বলেছিলাম আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। মেয়ে সাফ জানিয়ে দিল তার সরকারি জবওয়ালা ছেলে চাই। আমি সেই-দিন শুধু ‘বাই’ বলে আর কখনো নক করিনি। মেয়েটা সেদিন আমায় ফোন দিয়েছিল: “জব পাইছ?” ফোনের ওপাশ থেকে প্রথম...

একটি হাতের স্পর্শ

এই প্রথম কেউ নিশীথের হাত ধরল। কী শীতল এই ছোঁয়া। কত আপন, কত পরম, কত শান্ত হাতের তালু। ঠিক যেন মায়ের মতো। নিশীথ যখন খুব ছোট, কতোই-বা বয়স—পাঁচ-ছয় হবে, তখন একদিন ভোরবেলা কী-একটা বাজে স্বপ্ন দেখে নিশীথের ঘুম ভেঙে যায়। কত যে বাজে- ভয়ানক ছিল সেই স্বপ্ন...

Locbook Platform

Locbook is an independent platform for aspiring writers

error: Content is protected !!