“আমি বিয়ে করছি না, না, আমার বিয়ে হয় না কারন আমার মা পাগল। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই সবার ধারণা আমারও সেরকমই হবে কিছুদিন পর।”
-“কি বলেন?!”
“জ্বী এটাই আসলে সত্যি। বাঙালীদের পাগল বা মানসিক ভারসাম্যহীন দের নিয়ে জ্ঞান অত্যন্ত সীমিত। অনেকেরই ধারণা এটা ছোঁয়াচে টাইপ রোগ। আবার সব মানসিক সমস্যাই বংশগত!”
-“এহেম এহেম…”
“জ্বী আপনারও হয়তো কিছু ধারণায় মিলে গেছে এগুলো…”
-“না মানে…”
“আমি আজ আসি। আপনি রাজি হলেও ‘আমার মা পাগল’ কথাটা শোনার পর আপনার পরিবার রাজি হবেনা। শুধু শুধু সময় নষ্ট করে লাভ নেই।”
-“নীতু, আপনি কি আমাকে একবার সুযোগ দেবেন?”
“সুযোগ দেয়া না দেয়ার কিছু নেই। আপনি ফ্যামিলি রাজি করিয়ে বাসায় প্রস্তাব পাঠান। আমার বাসায় এমন অবস্থা যদি কোন নেশাখোর মাতালও প্রস্তাব পাঠায়, চোখ কান বুজে আমাকে সেখানে বিয়ে দিয়ে দেবে। আর আমার অবস্থাও এমন না যে আমি সেটাকে না করবো। ও হ্যা আপনার ফ্যামিলিকে এটাও বলবেন যে আমার ফ্যামিলি প্রচন্ড ডিস্টার্বড, ব্রোকেন। আমার বাবা আরেকটা বিয়ে করে সেই বউকে আমাদের বাসায় তুলে এনেছেন, আমার মা কে প্রচন্ড টর্চার করতেন বিয়ের পর থেকে, আর এই বিয়ে দেখেই আমার মা পুরোপুরি পাগল হয়ে গিয়েছেন। তাকে মাঝে মাঝেই ফাঁকা একটা রুমে তালা দিয়ে রাখতে হয়। এরপরও আপনার পরিবার রাজি হলে প্রস্তাব পাঠান। আমার কোন সমস্যা নেই।”
রাজু খানিকটা স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো। নীতু তাদের অফিসের সবচেয়ে চটপটে, হাসিখুশি মানুষ। অফিসে খুব অল্প মানুষ আছে যারা নীতুকে পছন্দ করেনা। নীতুর মাঝে প্যাচালো কিছু চোখে পড়েনি গত ৩ বছরে রাজুর। রাজু নীতুকে বেশ পছন্দ করে। আকারে ইঙ্গিতে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করেছে। নীতু বোঝেনি নাকি বুঝেও বুঝতে চায়নি এটা রাজু বোঝেনি। রাজুর বাসায় পাত্রী দেখা হচ্ছে। রাজু সরাসরি নীতুকে এপ্রোচের চেষ্টা করে আজকে তাই। কিন্তু এগুলো শুনে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে গেছে।
বাসায় ফিরতে ফিরতে রাজু বোঝার চেষ্টা করলো যে তার পরিবারে বিশেষত মা কে কথাগুলো জানালে কি রিয়েক্ট করতে পারে। বড় আপুও আছে। ছোট বোন আর বাবাকে নিয়ে যে সমস্যা নেই এটা রাজু জানে। বাসায় ডিশিসন মেকার মূলত মা আর বড় বোন। রাজুর বাবা নিতান্ত সোজা সরল মানুষ, এত বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না।
বাসায় ফিরে আসতেই রাজুর মা আসলো, হাতে দুইটা ছবি আর একটা কাগজ, হয়তো যার ছবি তার সিভি। টেবিলে রেখে বললো, “ফ্রেশ হয়ে এসে দেখিস। মেয়েটাকে ভালো লেগেছে”
রাজু ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো মা টিভি দেখছেন। তার কাছ ঘেষে বসে বললো, “মা, একটা মেয়েকে ভালো লাগে আমার জানো?”
-“তাই নাকি? বলিস নি তো!”
“এই যে বললাম। আমাদের অফিসের। নীতু নাম। চেহারা খুব আহামরি সুন্দরী না, সাধারণ। তবে এত হাসিখুশি এত চঞ্চল একজন মানুষ। কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেন না। অফিসের দারোয়ান পিয়ন দের সাথেও আপনি করে কথা বলেন হেসে হেসে..”
-“বাহ! ছবি আছে মেয়েটার? দেখা তো! আগে বললেই তো আর এত মেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে হতো না!” বেশ আনন্দিত কন্ঠ মায়ের।
“গ্রুপ ছবি আছে আমার কাছে, সিঙ্গেল নেই। আচ্ছা ফেসবুক প্রোফাইলে আছে হয়তো, দেখাই।”
রাজু নীতুর ছবি দেখায় তার মা কে। তার মা বেশ পছন্দ করলেন নীতুকে। বড় আপাকেও জানালেন। প্রথমে দেখে সবাইই পছন্দ করলো। রাজু নীতুর ব্যাপারে বাকি কথা বলার আর সাহস পেলো না সেদিন।
পরেরদিন অফিসে রওনা হতেই মা পেছন থেকে বললেন, “নীতু মেয়েটাকে আনিস বাসায় একদিন, দেখবো!”
রাজু কিছু না বলেই হাঁটা দিলো।
অফিসে এসে রাজুর চোখ খুঁজতে থাকে নীতুকে। পেলো না। সাধারণত কামাই দেয়ার মেয়ে না নীতু। এতদিনে সে নীতুকে খুব একটা অফিস কামাই দিতে দেখেনি আর একবারে সময় মেইনটেইন করে চলে সে৷ তার এতক্ষনে অফিসে চলে আসার কথা।
সেদিন নীতু আর এলো না। নীতুর পাশের ডেস্কের অনন্যা মেয়েটা জানালো, নীতু হঠাৎ করেই একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই আসেনি৷ ৩ দিনের ছুটি নিয়েছে। রাজুর মন টা খারাপ হলো, সাথে বেশ দুশ্চিন্তাও হতে থাকলো।
বিকালে অফিস থেকে বের হওয়ার আগে কি মনে করে যেন নীতুর ঠিকানা যোগাড় করলো। হটাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিলো নীতুকে দেখতে যাবে।
কিছু ফলমূল কিনলো, নিয়ে নীতুদের বাসার দিক রওনা হলো।
নীতুদের বাসায় পৌছানোর পর একজন মহিলা দরজা খুলে দিলেন। রাজু পরিচয় দিতেই ভেতরে বসতে বললেন। রাজু ড্রইংরুমের সোফায় বসে অপেক্ষা করতে লাগলো। ড্রইং রুমটা বেশ গোছানো, দেয়ালে কিছু ছবি, নীতুর ছোটবেলার বোঝা যাচ্ছে। সাথে তার মা বাবা। কিছু দারুন পেইন্টিং আছে, বেশ নজরকাড়া। হঠাৎ নীতু আসলো।
“বাসায় কেন এসেছেন? দেখতে যে ঠিক বলেছি কি না?!”
-“কাউকে দেখে শুরুতে হাই হ্যালো দিতে হয় বা সালাম দিতে হয়!” একটু হেসে রাজু বললো। নীতুর হাতে ব্যান্ডেজ, গলা দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া।
“আমার এখন আপনার সাথে মধুর আলাপ করার মতো অবস্থা নেই!”
-“সে বুঝতে পারছি। আপনি অসুস্থ, অনন্যা ম্যাডাম বললেন। তিনদিনের ছুটি নিয়েছেন ভাবলাম দেখে যাই। বুঝিনি বাসায় আসলে রেগে যাবেন। আগে কখনো আপনাকে রাগতে দেখিনি। ফলগুলো খাবেন। আর তিনদিনের ছুটিতে মেবি হবেনা তাই না?”
“আমার ছুটি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা!”
এর মধ্যে চা নাস্তা দিয়ে গেলো সেই মহিলাটি।
-“আচ্ছা আমি আসি, এখন এগুলো খাওয়ার ইচ্ছে নেই। আচ্ছা, বাসায় আপনার কথা জানিয়েছি। তারা আপনার ছবি দেখেছে ফেসবুকে। পছন্দ করেছে।”
“আমার ফ্যামিলির কথা জানিয়েছেন?”
রাজু একটু চুপ করে থেকে বললো,
-“মানে আসলে পরিস্থিতি হয়নি! মা আপনাকে আমাদের বাসায় যেতে বলেছেন!”
“সব জানিয়ে প্রস্তাব আনতে বলেছি। কারো সাথে প্রেম করার ইচ্ছা, সময় কোনটাই আমার নেই।”
-“জ্বি। আচ্ছা জানা হলো না আপনার হাত ভেঙেছে কিভাবে? আর ভেঙেছে না কি অন্যকিছু?”
“ভেঙেছে। মা হাতে ভাঙা একটা কাঠের খাটের পায়া পেয়েছিলো, ওটা দিয়ে বাড়ি দিয়েছে।”
-“ইসস। আচ্ছা ডাক্তার কি বলেছে? কতদিন লাগবে ঠিক হতে?”
“এক দেড় মাস।”
-“অফিস কবে ফিরবেন?”
“জানিনা..”
-“আপনি বোধহয় বিরক্ত হচ্ছেন, আমি আসি।”
হঠাৎ করে একটা অমানুষিক চিৎকার শোনা গেলো। এত তীব্র আর তীক্ষ্ণ, রাজুর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো! নীতু তড়িঘড়ি করে “আল্লাহ হাপেজ” বলেই বাসার ভেতরের দিকে দৌড় দিলো। রাজুর বুঝতে বাকি রইলো না, চিৎকার টা নীতুর মায়ের। রাজু আর বসলো না সেখানে, বাসায় ফিরে গেলো।
বাসায় ফিরতেই রাজুর মা দৌড়ে এলো, খানিকটা রাগী স্বরেই বললো,
-“এত দেরি করে ফিরলি যে! টেনশনে আমি অস্থির! ফোন তো দিতে পারতি একটা, আবার আমি দিলাম ধরলিও না!”
“নীতুর হাত ভেঙে গেছে, উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম!”
-“আহারে! তো একবার কল দিয়ে জানাতে পারতি! হাত ভাঙলো কিভাবে মেয়েটার?”
“উনার মা ভাঙা খাটের পায়া দিয়ে বাড়ি মেরেছেন উনার হাতে!”
-“মানে?! এত বড় মেয়েকে কেউ মারবে কেন এভাবে, কি বলিস?!”
রাজু সব খুলে বলতেই রাজুর মা প্রচন্ড রেগে গেলেন!
-“শেষ পর্যন্ত একটা পাগলের মেয়েকে পছন্দ করেছিস?! আর ওর বাপেরও ত স্বভাব চরিত্র খারাপ! ছিঃ ছিঃ এমন ফ্যামিলির মেয়ে কে কিভাবে পছন্দ করলি তুই? একটাবারও ভাবলি না যে সবাই কি বলবে?! আমাদের মান সম্মান কই যাবে এই মেয়ের সাথে তোকে বিয়ে দিলে?! সমাজ কি ভাববে!! এই মেয়ের সাথে আমি মরে গেলেও তোকে বিয়ে দেবোনা। আগামী এক মাসের মধ্যে তোর বিয়ের ব্যবস্থা করছি আমি দাড়া! এই মেয়ে তোকে ফাঁসালো আর তুইও ফেঁসে গেলি, জানি তো এসব মেয়েদের! নাটক করে ছেলে ফাঁসায়…”
“মা নীতু এরকম নয়। না জেনে আজেবাজে কথা বলো না। আর সমাজের কি বলার আছে? মেয়েটা তো দোষ করেনি তাই না? বিয়ে করে সংসার করবো আমি, আর সবার ভাবনাতে কি এসে যায়?”
-“কি রে! এই মেয়ে কি তোকে যাদুটোনা করছে নাকি রে?! এখনই আমার মুখের উপর কথা বলছিস এই মেয়ের সাপোর্টে?”
রাজু আর কিছুই বলতে পারলোনা। পরের দুটো সপ্তাহ রাজুর কাটলো পুরোই মানসিক অশান্তিতে। একদিকে সে নীতুর কোন খোঁজ পাচ্ছিলো না, কারন নীতু তার ম্যাসেজের রিপ্লাই দেয় না, কল ধরে না। অনন্যা কে বার বার জিজ্ঞেস করলেও সমস্যা, উলটাপালটা কথা ছড়াবে অফিসে।অন্যদিকে বাসায় নীতুকে মানানো নিয়ে মা আর বড়বোনের ঝামেলা। রাজুর মনে হতে লাগলো ও ই পাগল হয়ে যাবে এইরকম মানসিক চাপে।
দুই সপ্তাহ পর নীতু অফিসে আসলো। কে কি ভাববে তোয়াক্কা না করেই রাজু নীতুর ডেস্কে গেলো।
নীতু একটু হাসলো, “কেমন আছেন?”
-“জ্বী ভালো। আপনার কি অবস্থা?”
“দেখতেই পাচ্ছেন, এখনো হাত ঝুলে আছে।”
-“অফিসে কাজ করতে আসলেন, সমস্যা হবেনা?”
“নাহ। আর আমার বাসার চেয়ে অফিসে শান্তি বেশি আশা করি বুঝতে পারছেন। সেদিনের জন্য দুঃখিত, আসলে খুব অস্থির একটা সময় যাচ্ছিলো। “
-“আরে না না, আমি বুঝতে পেরেছি। সমস্যা নেই!”
“বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ।”
-“আপনি একদিন আমার বাসায় চলুন না! আমার মায়ের সাথে একটু কথা বলবেন!”
“আপনার মা রাজি হচ্ছেনা তাই না? আমি অপমান হতে আপনার বাসায় যেতে চাই না। আপনি বরং ভালো কোন মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেলুন রাজু স্যার!”
রাজু হঠাৎ করেই চুপ হয়ে গেলো। নীতু একটা হাসি দিয়ে কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
এক মাস পর রাজুর বিয়ে ঠিক হলো লায়লা নামের একজন মেয়ের সাথে। রাজুর মন থেকে নীতু কখনোই সরেনি, তবে ফ্যামিলিকে রাজি করাতে পারেনি। ওর মতামতের তোয়াক্কা না করেই এই বিয়ে ঠিক হলো। একবার ভাবলো নীতুকে লুকিয়ে বিয়ে করে ফেলবে। নীতুকে এ কথা বলার সাহস হয়নি, মেয়েটার জীবন এমনিই দুর্বিষহ। তার পর এরকম কিছু করলে, তাকে ভালো তো রাখতে পারবেই না, উলটো আরো খারাপ হবে। রাজুর বিয়ের আগের দিন রাতে হঠাৎ করে নীতুর কল আসলো। রাজু বেশ অবাক হলো কারন নীতু কখনো তাকে অফিসিয়াল প্রয়োজন ছাড়া কল করে নি, আর রাতে তো নয়ই।
“কংগ্রাচুলেশনস রাজু স্যার!”
-“আপনি কি হ্যালো বলা শেখেন নি?”
“নাহ। হাহা! আশা করি আপনার একটা সুন্দর জীবন হবে। প্লিজ আপনার বউয়ের অনেক যত্ন নিবেন, প্লিজ। কখনোই অবহেলা করবেন না!”
-“চেষ্টা করবো…”
“আসলে কি জানেন, আমার মত একজন মানুষ কে আপনি ভালোবাসা দেখিয়েছেন, ফ্যামিলিতে গ্যাঞ্জাম সহ্য করেছেন, অল্প দিন হলেও, এটা আমার জন্য বিরাট পাওয়া। এট লিস্ট কেউ চেষ্টা করেছে। বেশিরভাগ তো নিজেরাই সরে যায়।”
-“কি যে বলেন, আমি তো পারলাম না, ব্যর্থ হলাম…”
“চেষ্টা ত করেছেন। আমি জানি আপনি আমাকে অনেক আগে থেকে পছন্দ করতেন। কিন্তু এই যে, এই কষ্ট, মানসিক যন্ত্রণা, ফ্যামিলি চাপ এসব নেয়ার বা দেয়ার মত কোন ইচ্ছা, ক্ষমতা আমার নেই। আমি চাই না আমার এই অভিশপ্ত জীবনে আর কাউকে জড়াতে, চাই না আমি…”
-“নীতু আপনি খুব ভালো একজন মানুষ…”
“তাতে কি আসে যায় রাজু স্যার? আমার বাবা একজন নষ্ট মানুষ, মা কে শুধু শুধু টর্চার করতো, পরকীয়া করে বিয়ে করলো, সেই বউকে বাসায় আনলো, মা এই দুইজনের টর্চারে পাগল হয়ে গেলো। আমার যাওয়ার জায়গা নেই, কোথাওই না। আমিও এসব সহ্য করতে থাকলাম। বাবার খারাপ কাজ, মায়ের পাগল হয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে সাফার করতে হলো। মাঝে মাঝে মনে হতো যাই রাস্তায়, রেল স্টেশনে থাকবো, টুকায় খাবো। কিন্তু মা কে ছেড়ে যেতে পারিনি, ভেবেছিলাম চাকরি পেলে মা কে নিয়ে আলাদা থাকবো, তাও হলো না, মায়ের ট্রিটমেন্ট করাতে যেয়েই সব বেতন চলে যায়। বাবা অবশ্যই মায়ের ট্রিটমেন্ট এর টাকা দেন না।
একজন নষ্ট মানুষের মেয়ে ভালো হলেও কি, সে নষ্টই হয়ে যায়, সমাজ তাকে ভালো চোখে দেখতে পারেনা… সমাজ টা এমনই… যাই হোক, আপনার মন খারাপ করিয়ে দিতে চাচ্ছিনা, অনেক অনেক সুখী হন, আর প্লিজ নষ্ট মানুষ হবেন না…!”
-“চেষ্টা করবো…”
“আপনি যে আমাকে ভালোবাসা দেখিয়েছেন, সেই ভালোবাসাটা আমার লাইফের অনেক খারাপের মধ্যে খুব ভালো কিছু অনুভূতি, অফিসে যেয়ে আপনাকে দেখলেই মন টা আরো ভালো হয়ে যেত। আপনি যে আমার জন্য ফুল রাখতেন মাঝে মাঝে ডেস্কে, আমার খুব ভালো লাগতো। তবে এখন থেকে সেই ফুল নিজের স্ত্রীর জন্য নিয়ে আসবেন। আমার জন্য যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তারচেয়ে হাজার গুন বেশি ভালোবাসা তাকে দিবেন প্লিজ!”
-“নীতু….”
“ভালো থাকবেন, খুব খুব। আচ্ছা রাখি আমি। আমার জন্য মন খারাপ করবেন না। বাবার মায়ের পাপের বোঝা সন্তানদেরও চাপিয়ে দেয় সমাজ। এত শিক্ষিত হয়েও সমাজের শেকল ছেড়ে বেরোতে পারি না বলেই আমরা সামাজিক জীব….মানুষ না….”
লাইন টা কেটে গেলো, রাজু অনেক্ষন দাঁড়িয়ে থাকলো, রাতের নিস্তব্ধতা বাড়তে থাকলো….. নীতুর হাসি মুখটা চোখের পর্দায় ঝুলে রইলো
মাথায় বাজতে থাকলো
“ওহে কি করিলে বলো পাইবো তোমারে…”
-লাবিবা ইরম (Labiba Erom)
২৭।০৮।২০২১